Banner

সন্দেশখালীর ঘটনায় ১০ দিনের পুলিস হেফাজত শেখ শাহজাহানের

সন্দেশখালীর ঘটনায়  ১০ দিনের পুলিস হেফাজত শেখ শাহজাহানের

সন্দেশখালীর ঘটনায়  ১০ দিনের পুলিস হেফাজত শেখ শাহজাহানের

শাহজাহানকে ধরার জন্য ৭২ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসও। তাঁর সেই মন্তব্যের ২ দিন পরই গ্রেফতার সন্দেশখালির বেতাজ 'বাদশা'।

১০ দিনের পুলিস হেফাজত শেখ শাহজাহানের। সন্দেশখালিতে ইডি অফিসারদের উপর হামলার ৫৬ দিনের মাথায় গ্রেফতার শেখ শাহাজাহান। মিনাখাঁ থেকে গ্রেফতার সন্দেশখালির 'বাদশা'। গ্রেফতারির পর এদিন বসিরহাট আদালতে পেশ করা হয় ধৃত শেখ শাহাজাহানকে। পুলিসের তরফে শেখ শাহজাহানের ১৪ দিনের হেফাজত চাওয়া হয়। তবে বিচারক ১০ দিনের পুলিসি হেফাজত মঞ্জুর করেন। কোর্টরুম থেকে লক-আপে তোলার সময় রীতিমতো 'রাজকীয়' মেজাজেই দেখা যায় সন্দেশখালির 'বাদশা'কে। যদিও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কিছু বলতে চাননি শেখ শাহজাহান।

প্রসঙ্গত,  দুদিন আগেই কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দেয় শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতারের ব্যাপারে কোনও বাধা নেই। তাকে গ্রেফতার করতে পারবে ইডি, সিবিআই ও রাজ্য পুলিস। শেখ শাহাজাহান ৮ দিনের মধ্যে গ্রেফতার হবেন বলে আশ্বাস দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওদিকে গত সোমবারই তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছিলেন ৭ দিনের মধ্যে শাহাজাহানকে গ্রেফতার করতে পারে পুলিস। পাশাপাশি শাহজাহানকে ধরার জন্য ৭২ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসও। তাঁর সেই মন্তব্যের ২ দিন পরই গ্রেফতার সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা। গতকালই স্থগিতাদেশ উঠেছে। তারপরই এদিন ভোর রাতে গ্রেফতার।

এডিজি সুপ্রতিম সরকার , শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারির পর সাংবাদিক বৈঠক করে  বলেন, একটি অভিযানে  ইডি আধিকারিকরাও  আক্রান্ত হন। এই ঘটনায়  ইডির ডেপুটি ডিরেক্টর ন্যাজাট থানায় একটি অভিযোগও  দায়ের করেন । এই  অভিযোগের ভিত্তিতেই  নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা  হয় এবং  তদন্ত শুরু হয়। যদিও  তদন্ত শুরু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই ইডির তরফে উচ্চআদালতে গিয়ে ওই তদন্তের উপরে স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়। এই  আর্জি উচ্চ আদালত মঞ্জুরও  করে। ফলে ওই মামলায় কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা ছিল। যে কারণে শাহজাহানের গ্রেফতারির ক্ষেত্রেও একটা আইনি বাধা ছিল। তবে ইডির ক্ষেত্রে সেরকম কোনও রকম বাধাও  ছিল না। তা সত্ত্বেও ইডি কেন তাঁকে গ্রেফতার করেননি, এই নিয়েও প্রশ্ন ওঠা উচিত বলে মন্তব্য করেন এডিজি।

উল্লেখ্য, সন্দেশখালির বিক্ষুদ্ধ মানুষজন ও বিরোধীরা বারবার প্রশ্ন তুলছিল, কেন শাহজাহানকে গ্রেফতার করছে না পুলিস। এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে এডিজি স্পষ্ট করেন যে, "পুলিস ইচ্ছাকৃতভাবে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করছে না! এটা ঠিক নয়। এটা ভুল। আমাদের আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল।" গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে সন্দেশালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে যায় ইডি। সেই সময় ইডি অফিসাররা তাঁর নাগাল পাননি। উলটে ইডির অফিসারদের উপরই শেখ শাহজাহানের অনুগামীরা হামলায় চালায় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় আহত হন ২ ইডি অফিসার। মাথা ফাটে ইডি অফিসারের। তাঁদের গাড়ি ভাঙচুরও করা হয়।

সেই ঘটনার পর আর খোঁজ পাওয়া যানি শেখ শাহজাহানের। তাঁর নামে লুক আউট সার্কুলার জারি করে ইডি। এদিকে শাহাজান ফেরার হওয়ার পরই রাস্তায় নেমে পড়েন বিরোধী থেকে গ্রামবাসীরা। তাঁরা অভিযোগ করেন, শাহজাহান ও তাঁর অনুগামীরা এলাকার মহিলাদের হেনস্থা করেছে। সাধারণ মানুষের জমি কেড়ে নিয়েছে। শাহজাহানের বিরুদ্ধে পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে সন্দেশখালিতে। এলাকাবাসীকে শান্ত করতে এলাকায় যান ডিজি-সহ রাজ্য পুলিসের বহু আধিকারিক। এলাকায় করা হয়েছে ক্যাম্পও। শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেছে রাজ্য পুলিস। এর মধ্যে রয়েছে মহিলাদের উপরে নির্যাতন, জোর করে জমি কেড়ে নেওয়ার মামলা।